
ট্রেনঃ শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে আগ্রা যাবার সরাসরি ট্রেনের মধ্যে
পাবেন-উদ্যান আভা তুফান এক্সঃ।
মথুরা আসার ও যাওয়ার ট্রেনের লিস্ট জন্য click here.
বাসেঃ আগ্রার দুটি বাসস্ট্যান্ড ঈদগাহ এবং আগ্রা ফোর্ট
থেকে আধ ঘণ্টা থেকে একঘণ্টা অন্তর ছাড়ছে
দিল্লির বাস। এই বাসে দেড় ঘণ্টার মধ্যে মথুরা পৌঁছে যাবেন (৫৮ কিমি)।
কোথায় থাকবেনঃ
মথুরায় ধর্মশালা এবং কমখরচের ও মধ্যমানের হোটেল
গুলির বেশির ভাগই মথুরা ক্যান্টনমেন্ট (MG) স্টেশনের এবং পুরানো বাস স্ট্যান্ডের অনেকটা
কাছাকাছি।
ধর্মশালাঃ
থাকার জন্য মথুরায় হোটেলের চেয়ে ধর্মশালার
সংখ্যাই বেশি।
- শ্রী কিশোরী রমণজি ধর্মশালা
- আগরওয়াল ধর্মশালা
- ধর্মশালা-গুজরাটি
- কলকাতাওয়ালি ধর্মশালা
হোটেলঃ
- রাহি টুরিস্ট বাংলো (২৪০৭৮২২)
- আগ্রা হোটেল (২৪০৩৩১৮)
- গৌরব গেস্ট হাউস (২৫০২৭৭২)
কী খাবেনঃ
মথুরায় রাবড়ি, পেঁড়া, খাজা ও পেঠা ভালো পাওয়া
যায়।
কী দেখবেনঃ
১. দ্বারকাধীশ মন্দিরঃ শহরের মাঝে প্রধান মন্দিরটি শেঠ গোকুল দাস ১৮১৪
সালে নির্মাণ করেন। এই মন্দিরে প্রতি বছর জাঁকজমক সহকারে হোলি ও জন্মাষ্টমী উৎসব
পালিত হয়। কাছেই দেখবেন কিংবদন্তি ঘেরা বিশ্রামঘাট। কংসকে বধ করার পর শ্রীকৃষ্ণ ও
বলরাম এই ঘাটে বিশ্রাম নিয়ে ছিলেন। এখানে নৌকা ভাড়া করে যমুনার ঘাটগুলো ঘুরে দেখা
যাই। অনুপম স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ঘাটগুলোর মধ্যে স্বামীঘাট অ অসিকুণ্ড ঘাট
উল্লেখযোগ্য।
২. শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দিরঃ ভক্তদের বিশ্বাস কাটরা কেশবদেবের এই মন্দিরটি
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানে নির্মিত। বীর সিংহের হাতে গড়া আদি মন্দির অবশ্য
ঔরাঙ্গজেব ধ্বংস করে নির্মাণ করেন ঈদগা। সাম্প্রতিক কালে এই মন্দির ও মসজিদকে ঘিরে
বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। কাছেই দেখুন ভাগবৎভবন।
৩. কনস্কিলা বা কংসের দুর্গঃ যমুনার উত্তরতীরে অত্যাচারী রাজা কংস এই দুর্গ
নির্মণ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি। দুর্গের অধিকাংশই আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও
অম্বরের রাজা মানসিংহ কংসের কারাগারটি সংস্কার করান।
৪. গীতা মন্দিরঃ সাম্প্রতিক কালে নির্মিত এই মন্দিরটি মথুরার সবচেয়ে আকর্ষনীয়
মন্দির। মন্দিরের বিভিন্ন থামে খোদিত রয়েছে গীতার ৭০০ শ্লোক। আর ভালো লাগে
দেওয়ালগাত্রের পৌরাণিক চিত্রাবলি।
৫. জামা মসজিদঃ আবু-উন-নবি খান ১৬৬১ সালে চারটি বড় মাপের মিনার
সহ জামা মসজিদ নির্মণ করেন। কারও কারও মতে
এটিই শ্রীকৃষ্ণ প্রকৃত জন্মভূমি।
৬. গভর্নমেন্ট মিউজিয়ামঃ (সোমবার ছাড়া প্রতিদিন খোলা থাকে ১০-৩০মিঃ থেকে
১৬-৩০ মিঃ প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা) এখানকার মৌর্জ, শুঙ্গ, কুষাণ ও গুপ্তযুগের অসংখ্য
পুরাকীর্তির সংগ্রহ এককথায় বিস্ময়কর। এই অমুল্য পুরাকীর্তিগুলির বয়স ৮০০ খ্রিঃ
পুর্ব থেকে ১২ খ্রিস্টব্দের মধ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন কুষাণ যুগের
শিল্পকর্মগুলি।
এছাড়াও মথু্রায় দেখবেন-
- বলভদ্র কুণ্ড
- সরস্বতী কুণ্ড
- পোট্রা কুণ্ড
- শিবতাল
- বৃন্দাবনের পথে পাগলা বাবা মন্দির
- ভুতেশ্বর মন্দির
- গোকর্নেশ্বর মন্দির
- রঙ্গেশ্বর মন্দির
- পিপ্লেশ্বর মন্দির
- যমুনা বাগ
- গুরুগোবিন্দ সিং – এর স্মৃতি বিজড়িত গুরুদোয়ারা
- জৈন সিদ্ধক্ষেত্র চৌরাশিয়া ( শেষ জৈন কৈবল্যজ্ঞানী শ্রী জম্মুস্বামীর তপস্যাস্থল)।
সারাদিনে
এই স্পটগুলো গাড়িতে কিংবা অটোতে ঘুরতে পারেন।
মথুরায়
আপনি যদি দুদিন থাকেন, তবে দ্বিতীয় দিনে গাড়ি ভাড়া করে বেড়িয়ে নিতে পারেন বেশ
কয়েকটি বৈষ্ণবতীর্থ।
১. গোকুলঃ যমুনা নদীর তীরে
মথুরা থেকে মাত্র ১৬ কিমি দূরে শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলার কেন্দ্রস্থল। গোকুল - এ গুগল ম্যাপ দেখতে click here. এখনে
দেখবেন-
- গোকুলনাথ মন্দির
- নন্দ কিলা
- দাউজি মন্দির
- মদনমোহন মন্দির
- বিঠঠলনাথ মন্দির
- দ্বারকাধীশ মন্দির
- গোপাল লালজি মন্দির
- বালকৃষ্ণ মন্দির
- রাজাঠাকুর মন্দির।
২. মহাবনঃ শ্রীকৃষ্ণের
শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত মহাবনের দূরত্ব মথুরা থেকে ১৮ কিমি। মহাবন - এ গুগল ম্যাপ দেখতে click here. যমুনার
তীরে এই বৈষ্ণবতীর্থের মুখ্য আকর্ষণ –
- মথুরানাথজি মন্দির
- চৌরাশি খাম্বা (চুরাশিটি স্তম্ভ বিশিষ্ট বৌদ্ধ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত) প্রীচিন মন্দির।
- যোগমায়া মন্দির
- শ্যামলালজি মন্দির
- ছঠি-পালনা মন্দির
- মহমল রাইজি প্রাসাদ।
৩. বলদেবঃ শ্রীকৃষ্ণের আগ্রজ
বলদেও বা বলভদ্রের স্মৃতি বিজড়িত এই তীর্থের প্রধান আকর্ষণ
- দাউজি মন্দির
- ক্ষীরসাগর বা বলভদ্র কুণ্ড।
- মথুরা থেকে ২০ কিমি দূরে বলদেব হলি-কা-হুরাঙ্গা উৎসবের জন্য বিখ্যাত।
৪. গোবর্ধনঃ মথুরা থেকে ৩০ কিমি দূরে এই সেই কিংবদন্তি স্থল
যেখানে ইন্দ্রের কোপ থেকে রক্ষা করার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং কড়ে আঙুলে গোবর্ধন
পাহাড়কে ধারণ করেছিলেন। গোবর্ধন পর্বতের চূড়ায় দেখবেন-
- বল্লভাচার্জ প্রতিষ্ঠিত (১৫২০ সালে) মন্দির।
- মানসী গঙ্গা সরোবর
- কুসুম সরোবর
- সাকিতারা (এখানে ভরতপুর রাজ পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছে অনেকগুলি সুদৃশ্য ছত্রি। এর মধ্যে রাজা সুরজমল এবং বলদেবের ছত্রি সবচেয়ে সুন্দর।
৫. রাধাকুণ্ডঃ মথুরা থেকে ৩০ কিমি দূরে এই সুবিশাল সরবর
পৌরাণিক মতে এখানে অরিষ্ট দানবকে শ্রীকৃষ্ণ বধ করেন। রাধাকুণ্ড - সরাসরি দেখতে click here.
৬. বর্ষণাঃ মথুরা থেকে ৪৭ কিমি দূরে রাজস্থান সীমান্তে বর্ষণা
রাধার জন্মস্থান হিসাবে প্রসিদ্ধ। শ্রীরাধা বা রাধারানীকে এখনে বলা হয় লাডলিজি।
বর্ষণায় দেখবেন-
- ১৬৭৫-এ নির্মিত লাডলিজি মন্দির
- মন মন্দির
- মোরকুটির মন্দির
- শ্রীজি মন্দির
- রূপসাগর
- জলমহল
- প্রেম সরোবর (যেখানে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে শ্রীরাধার প্রথম সাক্ষাৎ হয়)। এখানকার লাঠমার হোলি বিখ্যাত।
৬. নন্দগাঁওঃ মথুরা থেকে ৫১ কিমি দূরে নন্দ রাজার অতীত আবাস
শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলার কেন্দ্র স্থল। এখানে দেখুন-
- টিলার টঙে নন্দরায় মন্দির
- নরসিংহ মন্দির
- গপীনাথ মন্দির
- গিরিধারী মন্দির
- নন্দনন্দন মন্দির
- যশোদানন্দন মন্দির
- নিত্যগোপাল মন্দির
- পান সরোবর
- কদম্ব কুঞ্জ।
৭. বৃন্দাবনঃ মথুরা থেকে মাত্র ১৫ কিমি দূরে যমুনার তীরে
মন্দিরময় বৃন্দাবনের বার্তমান পরিধি মাত্র ৭ কিমি হলেও কৃষ্ণদাস কবিরাজের ভাষায়
চৌরাশি ক্রোশ বেষ্টিত শ্রীব্রজমণ্ডল বা ব্রজভুমি। ধর্মপ্রাণ বৈষ্ণব তীর্থযাত্রীরা ২১
দিনে ব্রজ পরিক্রমা সমাপ্ত করে দর্শন করেন প্রায় হাজার চারেক কৃষ্ণলীলাস্থল। এখানে
দেখুন-
- মদনগোপাল মন্দির- খ্রিষ্টীয় ষোলোশতকে নির্মিত এই মন্দিরের শিলালিপি থেকে জানা যায় রামচন্দ্রের পুত্র গুনানন্দ এটি তৈরি করান। অবশ্য প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে এ নিয়ে মতভেদ আছে। জনশ্রুতি এই যে রামদাস বা কৃষ্ণদাস নামে জনৈক মুলতানি বনিক মদনমোহন মন্দির প্রতিষ্ঠাকরেন। ঔরঙ্গজেবের রষানল থেকে বাঁচাতে মদনমোহন বিগ্রহকে করৌলিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
- গোপীনাথ মন্দির- জয়পুরের রাজপুত্র রায় শিলাজি নির্মিত গোপীনাথ মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী কিছুটা মদনমোহন মন্দিরের মতো। রায় শিলাজি ছিলেন আকবরের সেনাপতি এবং শোনা যায় এই ঐতিহাসিক মন্দির নির্মাণের ব্যাপারে বাদশাহ স্বয়ং খুব উৎসাহী ছিলেন।
- গোবিন্দজি মন্দির- ১৫৯০ সালে জয়পুরের রাজা মানসিংহের হাতে গড়া এই মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। গ্রিক স্থাপত্যরীতিতে তৈরি করা মন্দিরটি আদিতে ছিল সাততলা। ঔরঙ্গজব ওপরের চারটি তলা ধ্বংস করেন। ঔরঙ্গজেবের হাত থেকে বাঁচাতে আদিমূর্তি সেই সময় জয়পুরে নিয়ে যাওয়া হয়। বলা হয় গোবিন্দর অনুপম মুখমণ্ডল, গোপীনাথের প্রশস্ত বক্ষদেশ ও মদনমোহনের শ্রীচরণযুগল দর্শন করলে বৃন্দাবনের শ্রীকৃষ্ণ দর্শন সম্পুর্ন হয়।
![]() |
Kusuma Sarovar Ghat |
এ ছাড়া বৃন্দাবনে অবশ্যই দেখবেন-
- দক্ষিণী স্থাপত্যরীতিতে গড়া রঙ্গজি মন্দির
- বাঁকাবিহারী মন্দির
- কোশিঘাটে যুগলকিশোর মন্দির
- ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বিহার ভুমি সেবাকুঞ্জ
- শ্রীরাধার ক্রীড়াস্থলী নিধুবন
- কদম্বখণ্ডী ঘাট
- ভুতেশ্বর মন্দির
- কুমুদবন
- প্রেম সরোবর
- ক্ষীরসাগর
- মানস সরোবর
- ইস্কন মন্দির
- বিড়লা মন্দির
- পাগলাবাবার মন্দির।
চুক্তিতে অটো ভাড়া করে মথুরা থেকে বেড়িয়ে নিন এই
স্পটগুলো।
প্রয়োজনীয় তথ্য ও ফোন নম্বরঃ
ডিস্ট্রিক্ট হসপিটাল – ২৪০৩০০৬, ডি এম – ২৪০৪১৫২,
এস পি – ২৪০৫১৭২, বাসস্ট্যান্ড – ২৪০৬৪৬৮, রেলওয়ে ষ্টেশন – ২৪০৫৮৩০, ১৩১, ১৩৫,
ট্যুরিস্ট অফিস – ২৫০৫৩৫১।
__________________________________________________________
Vrindavan Parikrama 2014 (www.iskcondesiretree.net)
_____________________________________________
Mathura Map
Good information to read. This post is very effective and images also helping us to understand your point.
ReplyDeletehttps://www.bharattaxi.com/